কিভাবে যে কোন খারাপ অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসা যায় ? Motivational Speech
যখন কোন খারাপ অভ্যাস মানুষের আসক্তিতে পরিণত হয় , তখন ওই খারাপ অভ্যাস মানুষের জীবনটাকে শেষ করে দেয় । যখন কোন অভ্যাস আপনি শুরু করেন , তখন শুরু করাটা বেশ সহজেই হয় । কিন্তু যখন ওই অভ্যাসটি আপনারা আসক্তিতে পরিণত হয় , তখন সেটা থেকে বের হয়ে আসা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায় ।কোন কোন মানুষের জুয়া খেলার অভ্যাস থাকে , কারো বা নেশা করার , ফেসবুক চালানোর, পাবজি খেলার আবার কারো বা দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা ইত্যাদির অভ্যাস থাকে । কিন্তু এই অভ্যাসগুলো যখন আপনারা আশক্তিতে পরিণত হতে থাকবে , তখন থেকেই আপনার জীবন ধ্বংস হতে থাকবে ।
অবশ্যই পড়ুনঃ-
অনেক মানুষের অভ্যাস থাকে কিছু সময় অন্তর অন্তর সিগারেট খাওয়া , অকারণে বারবার ফেসবুক বা ইউটিউব খোলা । আবার কিছু মানুষ এমন আছেন , যারা প্রতিদিন মদ খান , নেশা করেন । আর এতটাই তারা আসক্ত হয়ে পড়েন যে , মদ খাওয়ার জন্য চুরি পর্যন্ত করেন । নিজের মা-বাবা বউ সন্তানদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে ।
ঝগড়া করে , এমনকি মারধর করে । এমন ব্যক্তি না পারবে নিজে খুশি হতে , আর না পারবে পরিবারকে খুশি করতে । তার জীবনটাই অশান্তিতে ভরে যাবে ।তাই সব সময় মনে রাখবেন , কোন খারাপ অভ্যাস তৈরি করার আগে অনেক ভেবেচিন্তে দেখবেন বা বোঝার চেষ্টা করবেন ওই অভ্যাসটি আপনার জীবনে কি কি প্রভাব ফেলতে পারে !
একটা গল্পের মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করছি , এক ব্যক্তি ছিল যার মদ খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়েছিল । প্রথমে তিনি মাঝে মাঝে বা কিছুদিন পর পর মদ খেতেন । তারপর তিনি প্রতিদিন মদ খাওয়া শুরু করেন ।
এরপর তার অভ্যাস এতটাই চরমে পৌঁছে গেল যে তিনি সকাল দেখতেন না , দুপুর দেখতেন না , সন্ধ্যা দেখতেন না , রাত দেখতেন না , সব সময় মত খেয়ে নেশার মধ্যে থাকতেন । ওই ব্যক্তির স্ত্রী তাকে অনেক বোঝাতেন , বলতেন তুমি কেন মদ খাওয়া ছাড়ছো না ।
তোমার এই অভ্যাস তোমাকে শেষ করে দিচ্ছে , তোমার শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে , আমাদের সংসার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে । এবার তুমি শুধরে যাও । তখন ওই ব্যক্তি বলতেন , আমি কি করবো ? আমি তো আর অভ্যাসটা ধরে নেই , এখন অভ্যাস আমাকে ধরে রেখেছে ।
অবস্থা ভালো না দেখে তার স্ত্রী তাকে একজন ভালো ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে এবং সব খুলে বললেন । তারপর থেকে ওই ব্যক্তি মাঝে মাঝে ওই ডাক্তারের কাছে যেতেন আর তার সমস্যার কথা বলতেন । অনেক ভেবে ডাক্তার তাকে বোঝাতে কিন্তু বোঝানো কি হবে । ওই ব্যক্তি একই কথা বলতেনব, আমি অভ্যাসটা ধরে নেই , এখন অভ্যাসটা আমাকে ধরে রেখেছে ।
অবশ্যই পড়ুনঃ-
কিছুদিন পর আবার যখন ওই ব্যক্তি ওই ডাক্তারের কাছে গেলেন ,তিনি দেখতে পেলেন ডাক্তার একটা গাছ জড়িয়ে ধরে আছে । এটা দেখে ওই ব্যক্তি অবাক হলেন এবং ডাক্তারের কাছে জানতে চাইলেন আপনি কেন গাছটিকে জড়িয়ে ধরে আছে ? উত্তরে ডাক্তার বললেন , আমি গাছকে ধরে নেই গাছ আমাকে ধরে আছে । লোকটি শুনে অবাক হলেন এবং কিছু না বলেই সেখান থেকে চলে গেলেন ।
কয়েকদিন পর লোকটি আবার ডাক্তারের কাছে গেলেন এবং ডাক্তারকে ওই একই অবস্থায় গাছ জড়িয়ে থাকতে দেখলে । জানতে চাইলে ডাক্তার ওই একই বললেন । এবার লোকটি রাগ ধরে রাখতে পারলেন না । রেগে গিয়ে বললেন , গাছ কি কখনো ধরে রাখতে পারে !
আপনি গাছটিকে ছাড়লেই তো গাছ আপনার থেকে আলাদা হয়ে যায় । এবার ডাক্তার গাছটিকে ছেড়ে দিয়ে লোকটিকে বললেন , আমি তো এতদিন ধরে আপনাকে এটাই বোঝাতে চেষ্টা করেছি যে , অভ্যাস আপনাকে ধরে নেই , আপনি অভ্যাস টাকে ধরে আছেন ।
আপনি ইচ্ছা করেই ওই অভ্যাসকে ছাড়তে চান না ।কারণ আপনি এখনো পর্যন্ত ওই অভ্যাসটির মাধ্যমে মজা নিচ্ছেন । আর এখনও আপনার মন ওই অভ্যাসটি ছাড়ার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত নয় ।সেজন্য আপনি কখনো এটা বলবেন না যে , আপনার দ্বারা হবে না । সত্যিটা হলো আপনি মন থেকে ওটা ছাড়তে চান না ।
কোন খারাপ অভ্যাস ছাড়ার জন্য তিনটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে । এই তিনটি ধাপ প্রতিদিন ডায়েরিতে লিখতে হবে ।
- আপনার যে খারাপ অভ্যাসটি আছে সেটা আপনার কতটা ক্ষতি করছে ? কী কী কেড়ে নিচ্ছে বা নিতে পারে ? আর আপনার জীবনকে কতটা ধ্বংস করছে এবং এইভাবে চলতে থাকলে আপনার শেষ পরিণতি কী হতে পারে ? তা ডায়েরিতে লিখুন।।
- যদি আপনি ঐ অভ্যাসটি ত্যাগ করেন তাহলে ওই সময়টিতে আপনি অতিরিক্ত কি কি পজেটিভ কাজ করতে পারবেন । আর ওই পজেটিভ কাজের জন্য আপনার জীবনে অতিরিক্ত কি কি ভাল হতে পারে । তার একটি তালিকা তৈরি করুন ।
- ডায়েরিতে লিখুন , অভ্যাসটি ত্যাগ করার জন্য আপনার কি কি করতে হবে ? ওই সমস্ত কিছুর তালিকা তৈরি করুন যেগুলো ওই খারাপ অবস্থা কে ছাড়তে আপনাকে সাহায্য করবে । এইসব কিছু লিখার পর এইগুলো কে বাস্তবে রূপ দিতে হবে ।
পাবজি খেলার সময়টাতে নিজেকে অন্য কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে তাহলে দেখবেন পাবজি খেলার নেশায় টা আপনার থেকে অনেক দূরে চলে গেছে ।
কোন অভ্যাস থেকে বের হয়ে আসার খুবই কষ্টকর । কিন্তু দেখবেন চেষ্টা করলে সবকিছুই সম্ভব । তাই প্রথম কিছুদিন আপনার খুব কষ্ট হবে কিন্তু আপনার জীবনের বাকি দিনগুলো অনেক সুন্দর হয়ে উঠবে ।
পোস্টটি পড়ে আপনার কেমন লাগলো তা অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন । এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ।।
Post a Comment
Please Do Not Enter Any Spam Link In Comment Box;